অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ১৯ অক্টবার ২০২৫, সময়ঃ ০২:১০
সাইফুর রহমান শামীম,কুড়িগ্রাম:- ১৮/১০/২৫ সারাদেশের ন্যায় কুড়িগ্রামে যথাযোগ্য মর্যাদায় লালন সাঁইয়ের ১৩৫তম তিরোধান দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে কুড়িগ্রাম শিল্পকলা একাডেমী চত্বরে জেলা প্রশাসন কুড়িগ্রাম এর আয়োজনে ও জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সহযোগিতায় গতকাল (শুক্রবার) সন্ধ্যায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
এতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আসাদুজ্জামান এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ। লালন সাঁইয়ের জীবনী নিয়ে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাধন চন্দ্র নন্দী।এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান,এনডিসি এবিএম মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, জেলা কালচারাল অফিসার তমাল বোস, কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার রহমান খন্দকার, সঙ্গীত শিল্পী আলতাফ হোসেন বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, বাংলা ভাষা, বাংলার সংস্কৃতি, বাউল সম্প্রদায়সহ বাউল গান- সবই বাঙালির গৌরব।সেই গৌরবের ইতিহাসের গোড়াপত্তন করেছিলেন লালন সাঁই। লালন শাহ, মহাত্মা লালন, বাউল সম্রাট, মরমি সাধকসহ একাধিক নাম তাঁর।লালন একজন দার্শনিকও।তাঁর গান ও দর্শনের দ্বারা বিশ্বখ্যাত কবি, সাহিত্যিকরাও প্রভাবিত হয়েছেন।বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লালনের মৃত্যুর দুই বছর পর তাঁর আখড়াবাড়িতে যান এবং লালনের দর্শনে প্রভাবিত হয়ে ১৫০টি গান রচনা করেন। লালনকে বিশ্বকবি বিশ্ব-দরবারে তুলে ধরতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন।
লালন সমাজে প্রচলিত ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, জাতপাতের বিরুদ্ধে তিনি তাঁর মানবধর্মের মতবাদ প্রচার করেন গানের মাধ্যমে। তাঁর গান ও তাঁর অহিংসবাদী মতবাদ ছড়িয়ে পড়ে দেশ-বিদেশে। লালন সাঁই তাঁর গানের মাধ্যমে শুরু করেছিলেন নতুন এক মানবধর্মের চর্চা। তিনি জাতপাত, ধর্ম-বর্ণ, গোত্রের ঊর্ধ্বে গিয়ে মানুষ ও মানবতাকে বড় করে দেখেছেন। তিনি কোনো জাতিভেদ মানতেন না।ধর্ম-বর্ণহীন সমাজের কথাগুলো গানের মূলকথা হওয়ায় মানুষ তাঁর গানের মাধ্যমে মানবমুক্তির আশ্রয় খুঁজে পায়। সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধিমুক্ত সার্বজনীন ভাব-রসে সিক্ত বলে লালনের গান হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের কাছে সমান জনপ্রিয়।
আলোচনা শেষে লালন সাঁইয়ের গান নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় দর্শক শ্রোতার মন জয় করা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।এতে জেলার একমাত্র লালন চর্চা কেন্দ্র বা লালন আখড়ার প্রতিষ্ঠাতা সাধু ছালেক শাহ্, অন্যান্য সাধকবৃন্দ এবং জেলার বিশিষ্ট সংগীতশিল্পীগণ লালনের ভাবসঙ্গীত পরিবেশন করেন।
© Jonotar Potrika ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
সতর্কতাঃ অনুমতি ব্যতীত কোন সংবাদ বা ছবি প্রকাশ বা ব্যবহার করা যাবে না।